বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
যান্ত্রিক যানবাহনের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তায় একসময়ের অপরিহার্য পরিবহন ব্যবস্থা, ঘোড়ার গাড়ি, আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। একসময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বিবেচিত এই যানবাহন এখন কেবল সীমিতভাবে দেখা যায়, বিশেষত বিয়ের বহরে বা বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোতে। তবুও খুলনা জেলার ডুমুরিয়া, পাইকগাছার কিছু মানুষ আজও ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন, যদিও এটি এখন আর মানুষ পরিবহন নয়, বরং পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
জেলার ডুমুরিয়া, পাইকগাছা উপজেলার মানুষ ঘোড়ার গাড়িকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন মূলত চিংড়ি চাষ এলাকায় যানবাহনের সীমাবদ্ধতার কারণে। বড় বড় বিলগুলোতে বাঁধ দিয়ে চাষের ব্যবস্থা করায় ওইসব এলাকায় স্বাভাবিক যান চলাচল সম্ভব নয়। ফলে বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহৃত হয়। এ উপজেলায় বর্তমানে দেড় শতাধিক ঘোড়ার গাড়ি রয়েছে, যেগুলো ইটভাটা থেকে নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন, বালু ও মাটি বহন, এবং বসতবাড়ির কাজে ব্যবহৃত হয়।
যান্ত্রিক যুগে এই ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি পরিবেশ ও শব্দ দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কৃষিপণ্য, বাঁশ, কাঠ, এবং ইট বহনে এটি একটি বিশ্বস্ত বাহন। এ অঞ্চলের বহু মানুষ এই গাড়ির উপর নির্ভরশীল। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন মালত গ্রামের মেহের আলী মোড়ল। তিনি জানান, তার ঘোড়ার গাড়িতে ধান, বিচালী, বাঁশ, ইট, বালু, কাঠ এবং মাছ পরিবহন করা হয়। ডুমুরিয়া উপজেলার সাজিয়াড়া গ্রামের মো. রুহুল জানান, আমাদের উপজেলার হাতে গোনা ৪০-৫০টা ঘোড়ার গাড়ি আছে। আমরা এই গাড়ি দিয়েই জীবীকা নির্বাহ করে থাকি।
পাইকগাছার মাধবী রায় বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখছি ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে মালামাল টানে। ঘোড়ার সাহায্যে তেলের ঘানি টানা হয়, দৌড় প্রতিযোগিতা হয়। ইট, কাঠ, ধান, বিচালী পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহৃত হয়। ঘোড়ার গাড়ি শুধুমাত্র পরিবহনের মাধ্যম নয়, বরং এ অঞ্চলের ঐতিহ্য এবং মানুষের জীবিকার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
যেখানে আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহন সময়ের গতিকে আরো দ্রুত করে তুলছে, সেখানে ঘোড়ার গাড়ি যেন এক নীরব স্মৃতির সংরক্ষণ। এই গাড়ির চাকার ঘূর্ণন শুধু পণ্য নয়, বহন করে গ্রামীণ জীবনের সুখ-দুঃখের গল্প। দিনের পর দিন বিল, খাল, মেঠোপথ পেরিয়ে ঘোড়ার খুরের আওয়াজ জানান দেয় প্রাচীন এক ইতিহাসের। পাইকগাছার এই ঘোড়ার গাড়ি কেবল একটি বাহন নয়, এটি বাংলার মাটির সুর, মানুষের শ্রম আর প্রকৃতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এক অমূল্য ঐতিহ্য। তবে এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা ও সহযোগিতার।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক